সকল মুসলিম ভাইদের জানাই আমার সালাম- আসসালামু আলাইকুম এবং অমুসলিম ভাইদের জন্য রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই মহান আল্লাহ্র রহমতে ভাল আছেন । আমিও তাঁর দয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ বেশ ভাল আছি । আমাদের মধ্যেই অনেকেই আছি পড়াশুনা করছি এবং অনেকেই আবার কাজ করছি আবার এমন অনেকে আছি যারা বেকার বসে আছি । ইন্টারনেট নিয়ে কমবেশি সবাই ঘাটাঘাটি করি, অনেকে আবার অনলাইন থেকে আয়ের কথাও শুনেছি । কিন্তু কখনও চেষ্টা করি নি কিভাবে এটা সম্ভব । অনেকে হয়ত চেস্টাও করেছেন কিন্তু সফল হতে পারেন নি । অনেকে আবার দশ বিশ হাজার টাকা নষ্টও করে ফেলেছেন সহজেই আয়ের পথ খুজতে গিয়ে । (যেমন- Dolancer) আসলে এর মূল কারন হল আমরা না জেনেই একটা বেশি লাভের কথা শুনলেই সেখানে ছুটে যাই, ঠিক এই জন্যই বার বার ধরা খেতে হয় । তবে অনলাইনে আয় যে ভুয়া এমনটি কিন্তু মোটেও নয় । অনলাইনই আয়ের একমাত্র উৎস এমন লোকের সংখ্যা কিন্তু এদেশে অনেক ।
তাহলে এখন প্রশ্ন দাঁড়ায় তারা আসলে কি করে আয় করে?
হ্যাঁ, অনলাইনে আয়ের বিভিন্ন উপায় রয়েছে, তার মধ্যে সেরা এবং গ্যারান্টিড উপায় হল ফ্রীল্যান্সিং করা। ফ্রীল্যান্সিং হল স্বাধীন পেশা । এখানে আপনাকে কোন প্রকার ইনভেস্ট করতে হবে না এবং কাজ করার কোন বাধ্যবাধকতাও নেই । আপনি যে টুকু কাজ করবেন তার টাকা আপনি পেয়ে যাবেন । কিন্তু কাজ করতে হলে আপনাকে আগে অবশ্যই কাজ শিখতে হবে । আর নতুনদের জন্য সবচেয়ে সহজ যে কাজটি রয়েছে সেটি হল এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর কাজ । এটি শিখতে কম সময় লাগে, এর চাহিদাও ভাল এবং শুধুমাত্র এসইও এর কাজ দিয়েই আপনি প্রতি মাসে ১০-৩০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন । তবে, এতে কিন্তু আপনার এক পয়সাও ইনভেস্ট করতে হবে না।
ইন্টারনেটে কাজ
করে অর্থ উপার্জন :
কিভাবে করবেন
সরকার
ঘোষনা দিয়েছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের। প্রতিদিন এবিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে আগামীতে
আউটসোর্সিং হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আয়ের উতস, কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় যায়গা। তারপরও
যারা একাজ করবেন তারা অনেকেই অন্ধকারে রয়ে গেছেন। অনেকেই জানেন না ঠিক কি করবেন। কি
যোগ্যতা প্রয়োজন হবে, কি কি যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হবে, কি কাজ করতে হবে, কাজ কোথায় পাওয়া
যাবে, কত টাকা পাওয়া যাবে, কিভাবে পাওয়া যাবে।
এই
প্রশ্নগুলির উত্তর ধারাবাহিকভাবে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এখানে।
প্রথমেই
একটা কথা পরিস্কার করে নেয়া ভাল। বলা হচ্ছে কাজ করে অর্থ উপার্জনের বিষয়ে। কাজেই আপনাকে
কাজ করতে হবে, সে কাজ শিখতে হবে, অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। আপনার দক্ষতা
যত বেশি অর্থ উপার্জনের সুযোগ তত বেশি। এটাই একমাত্র পথ। যদি কাজ শিখতে এবং করতে পর্যাপ্ত
আগ্রহ এবং চেষ্টা না থাকে তাহলে সময় নষ্ট না করাই ভাল। সহজে অর্থ উপার্জন বলে যা বুঝানো
হয় তা আসলে ততটা সহজ না।
আউটসোর্সিং
কি ?
এটা
নিশ্চয়ই প্রথম প্রশ্ন। উত্তর হচ্ছে, বাড়িতে বসে অন্য কারো কাজ করা। উন্নত দেশগুলিতে
(আমেরিকা কিংবা ইউরোপ) মজুরী অত্যন্ত বেশি। কোন কোম্পানীর যদি নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম
তৈরী প্রয়োজন হয়, এজন্য যদি একজন প্রোগ্রামার নিয়োগ করতে হয় তাহলে বিপুল পরিমান টাকা
গুনতে হয়। সেকাজটিই অন্য দেশের প্রোগ্রামার দিয়ে করিয়ে নিলে তুলনামুলক কম টাকায় করানো
যায়। বর্তমান ইন্টারনেট ব্যবস্থায় খুব সহজে একাজ করা সম্ভব। আপনি সেই প্রোগ্রামার,
ডিজাইনার, এনিমেটর অথবা যাই হোন না কেন ইন্টারনেটের মাধ্যমেই তাদের কাজ করতে পারেন,
ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
বড়
কোম্পানীর বদলে ছোট কোম্পানী, কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ের কাজের কথা যদি এরসাথে যোগ করা
হয় তাহলে কাজের পরিধি বেড়ে যায় অনেক। ধরুন কোন ব্যক্তির একটি ওয়েবসাইট তৈরী করা প্রয়োজন।
তিনি নিজে সেকাজ পারেন না। কাজেই তার প্রয়োজন এমন একজন ব্যক্তি যিনি সেকাজ করে দেবেন।
আপনি যদি সেকাজে দক্ষ হন তাহলে আপনি আগ্রহি হয়ে সেখানে যোগাযোগ করলেন। সমঝোতা হল, আপনি
কাজটি করে দেবেন, বিনিময়ে ১০০ ডলার পাবেন। লাভ দুজনেরই।
কাজেই,
আউটসোর্সিং হচ্ছে এক যায়গার কাজ অন্যযায়গা থেকে করিয়ে নেয়া। এই কাজকে সহজ করার জন্য
অনেক প্রতিস্ঠান রয়েছে। তাদের ওয়ের সাইটে বিনামুল্যে সদস্য হওয়া যায় (আপনাকে বিনামুল্যে
সেবা দিয়েও তারা নিজেরা লাভ করেন। সে হিসেব আলাদা)।
তাদের
সদস্য দুধরনের, একপক্ষ কাজ দেন, আরেকপক্ষ কাজ করেন। আপনি যখন কাজ দেবেন তখন কাজের বিবরন,
সময়, অর্থের পরিমান ইত্যাদি তাদের জানাবেন। তারা ওয়েবসাইটে সেগুলি রেখে দেবেন যারা
কাজ করতে আগ্রহি তাদের জন্য।
আপনি
যত কাজ করবেন তখন তাদের ওয়েব সাইটে গিয়ে সেই তালিকা থেকে নিজের পছন্দমত কাজের জন্য
আবেদন করবেন (সাধারনত একটি লিংকে ক্লিক করাই যথেষ্ট)। যার কাজ তিনি আবেদনগুলি যাচাই করে যাকে যোগ্য মনে
করবেন তাকে কাজটি দেবেন। আপনি সেই ব্যক্তি হলে কাজটি করে ইন্টারনেটের মাধ্যমেই তারকাছে
পাঠিয়ে দেবেন। সাথেসাথে আপনার একাউন্টে কাজের অর্থ জমা হবে।
কাজের
ধরন
একটু
আগে দুধরনের কাজের কথা বলা হয়েছে, একটি কোম্পানীর, অপরটি ছোট কোম্পানী কিংবা ব্যক্তির।
আউটসোসিং এর কাজ মুলত এই দুধরনের। বড় কোম্পানীর বড় কাজ করার জন্য বড় প্রতিস্ঠান প্রয়োজন।
সেখানে আপনি একজন নিয়মিত কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন। আপনি ফ্রিল্যান্সার নন।
আর
ছোট কাজের ক্ষেত্রে আপনি নিজেই সবকিছু। যোগাযোগ, কাজ করা, অর্থ গ্রহন সবকিছু করতে হবে
নিজেকেই। অবশ্য কয়েকজন একসাথে শুরু করে ক্রমাম্বয়ে বড় কোম্পানীতে পরিনত হওয়া অবশ্যই
সম্ভব।
ধরে
নেয়া হচ্ছে আপনি একা কাজ করতে আগ্রহি। এখানে সে সম্পর্কিত তথ্যই উল্লেখ করা হচ্ছে।
এক
কথায়, কম্পিউটার ব্যবহার করে যাকিছু করা সম্ভব সবধরনের কাজই পাওয়া যায় এভাবে। গ্রাফিক
ডিজাইন, ওয়েব পেজ তৈরী, ওয়েব পেজের কোন সমস্যার সমাধান থেকে শুরু করে এনিমেশন, ভিডিও
এডিটিং কিংবা একেবারে সহজ ডাটা এন্ট্রি পর্যন্ত। কাজ যত সহজ অর্থের পরিমান তত কম, কাজ
যত জটিল অর্থের পরিমান তত বেশি এই নিয়মে।
উদাহরন
হিসেবে ওয়েব সাইটের জন্য ফটোশপে একটি ব্যানার বিজ্ঞাপন তৈরী করে যে পরিমান অর্থ পাবেন
ফ্লাশে এনিমেটেড ব্যানার তৈরী করে পাবেন তারথেকে অনেক বেশি অর্থ। বাস্তব ধারনা পাওয়ার
সবচেয়ে ভাল পথ হচ্ছে এধরনের ওয়েবসাইটে গিয়ে কাজের তালিকা দেখা।
কি
শিখতে হবে
কোন
কাজ আপনার জন্য ভাল সেটা যাচাইয়ের দায়িত্ব আপনার। আগ্রহ কোন বিষয়ে, দক্ষতা কোন বিষয়ে,
কতদুর পর্যন্ত যেতে পারবেন এগুলি একমাত্র আপনিই জানতে পারেন। কোন কাজে অর্থ বেশি এটা
বিচার করে সেই কাজ করতে না যাওয়াই ভাল। প্রোগ্রামার
হওয়ার জন্য একধরনের প্রতিভা প্রয়োজন, এনিমেটর হওয়ার জন্য আরেক ধরনের, ভাল ডিজাইনার
হওয়ার জন্য আরেক ধরনের। কোন বিষয়ে আগ্রহি হলে সে বিষয়ে খোজ নিন, কিছুদিন চেষ্টা করুন,
তারপর দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিন। এবিষয়েও সত্যিকারের
সাহায্য পাবেন এধরনের জব সাইটে। প্রতিটি কাজের বর্ননার সাথে কোন সফটঅয়্যারে দক্ষতা
থাকতে হবে তা উল্লেখ করা থাকে।
কত
আয় করা সম্ভব
বিষয়টি
পুরোপুরি আপনার কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে। অধিকাংশ কাজের হিসেব হয় ঘন্টা হিসেবে।
গ্রাফিক ডিজাইনকে উদাহরন হিসেবে ধরলে মাসে অনায়াসে হাজার ডলার আয় করা সম্ভব। প্রোগ্রামার
হলে অনেক বেশি।
কি
যন্ত্রপাতি প্রয়োজন
এধরনের
কাজে আপনার মুল অস্ত্র হচ্ছে মেধা। কাজেই দামী যন্ত্রপাতি নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন
হয় না, বিশেষ কাজ ছাড়া। কাজের ধরন অনুযায়ী অবশ্যই আপনার স্ক্যানার, গ্রাফিক ট্যাবলেট,
দামী ক্যামেরা ইত্যাদি প্রয়োজন হতে পারে। এধরনের বিশেষ যন্ত্র বাদ দিলে আপনার প্রয়োজন
একটি মোটামুটি পর্যায়ের কম্পিউটার এবং ভাল ইন্টারনেট সংযোগ।
বর্তমানে
যথেষ্ট কম টাকায় ভাল কম্পিউটার পাওয়া যায়। আর ইন্টারনেট সংযোগের বিষয়ে বলা আসলে অর্থহীন।
তারা আশা করে আপনি টাকা দেবেন, বদলে কি পাবেন তাতে তাদের কিছু যায়-আসে না। আর সরকার
কিংবা প্রশাসন যত বক্তৃতা-বিবৃতি দিক না কেন, ব্যবসায়িদের কাছে সবসময় মাথা নিচু করে
থাকে।
মুল
কথায় ফেরা যাক। ইন্টারনেটে কাজ করে অর্থ উপার্জনের এটা প্রাথমিক তথ্য। শুরুতেই আপনি
যা করতে পারেন তা হচ্ছে এধরনের ওয়েবসাইটে গিয়ে বিস্তারিত পড়া, বোঝার চেষ্টা করা। সত্যিকাজের
কাজের তথ্য তাদের কাছেই পাওয়া সম্ভব, অকারনে অন্য যায়গায় সময় নষ্ট করবেন না।
odesk,
freelancer এধরনের জনপ্রিয় ওয়েব সাইটের উদাহরন। সার্চ করলে এধরনের আরো বহু সাইট পাবেন।
ভালভাবে বোঝার জন্য কয়েকদিন নিয়মিত এই সাইটগুলিতে সময় কাটান।
কাজ
শুরু করুন, সেইসাথে আরো জানার চেষ্টা করুন।
No comments:
Post a Comment