ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য গ্রাফিক ডিজাইন
কিভাবে শিখবেন
Part-1
ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রাফিক ডিজাইন কাজ
একটি বড় কাজের যায়গা। হিসেব যেহেতু ডলারে এবং অল্প কাজ করেই এভাবে হাজার ডলার আয় করা সম্ভব। টাকার হিসেবে
পরিমানটা যথেষ্ট। যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রাফিক ডিজাইন পেশায় যেতে চান তাদের প্রথম প্রশ্ন,
কিভাবে শিখব ?
এখানে শেখার সম্ভাব্য পথগুলি সম্পর্কে
ধারনা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রথমেই একটা বিষয় পরিস্কার করে নেয়া ভাল। ইন্টারনেটে কাজ
পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রতিযোগিতা করতে হবে সারা বিশ্বের ডিজাইনারদের সাথে। প্রায় সব দেশেই একজন
শিক্ষার্থী গ্রাফিক ডিজাইনে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী নিতে পারেন। বাংলাদেশে এধরনের ব্যবস্থা নেই। এছাড়া শিক্ষাকে
একাডেমিক এবং প্রফেশনাল এই দুভাগে ভাগ করা হয়। বাংলাদেশে প্রফেশনাল ডিগ্রী বলে কোন বিষয়
নেই। অর্থতি গ্রাফিক
ডিজাইন শেখার জন্য প্রচলিত শিক্ষা প্রতিস্ঠানে যেমন ব্যবস্থা নেই তেমনি
দীর্ঘমেয়াদী ট্রেনিং নেয়ার ব্যবস্থাও নেই। ট্রেনিং সেন্টার নামে যে ব্যবস্থা আছে সেখানে যারা শেখান
তাদের অনেকেই ডিজাইনের মুল নিয়ম জানা প্রয়োজন বোধ করেন না। কাজেই তিনি শেখান কি করিলে কি হয়
পদ্ধতিতে। তারকাছে কাজ শিখেই সরাসরি কাজ করার আশা করতে পারেন না।
গ্রাফিক ডিজাইন শেখার জন্য কি শেখা
প্রয়োজন সেটা আগে জানা প্রয়োজন। একজন শিল্পীকে কয়েক বছর পড়াশোনা করে ছবি আকা শিখতে হয়। এই দীর্ঘ সময়ে
তাকে শেখানো হয় রং কি, রেখা কি। কিভাবে একাধিক
রঙের মিশ্রনে বিশেষ রং পাওয়া যায়। এই বিষয়গুলি বিজ্ঞান। ডিজিটাল ডিজাইনের ক্ষেত্রে কারিগরী বিষয় আরো বেশি
গুরুত্বপুর্ন। ডিসপ্লেতে রং কিভাবে কাজ করে, কাগজে প্রিন্ট
করার সময় কিভাবে কাজ করে, ইন্টারনেটে কিভাবে
কাজ করে এবিষয়ে ভাল জ্ঞান না থাকলে আপনি ভাল ডিজাইনার হতে পারেন না। সেইসাথে বিভিন্ন
ধরনের ইমেজ ফরম্যাট, তাদের সুবিধে-অসুবিধে, বিভিন্ন সফটঅয়্যার এবং ডিভাইস সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান থাকা
প্রয়োজন। শেখার প্রথম ধাপ পুরোপুরি তত্ত্ব। কোন টুল ব্যবহার করে কিভাবে কাজ করতে সেটা পরবর্তী ধাপ। এই প্রথম ধাপটিই
সাধারনত এড়িয়ে যাওয়া হয়। ফলে যিনি শেখেন তিনি নিজেকে ডিজাইনার মনে করছেন অথচ
ক্লায়েন্ট কেন তার কাজ পছন্দ করছেন না সেটা বুঝছেন না।
কাজেই বাংলাদেশ থেকে কেউ যখন বলেন কিভাবে
শিখব তার উত্তর দেয়া কঠিন। সবচেয়ে ভাল হয় যদি কোন প্রতিস্ঠানের সহায়তা পান। প্রাথমিক বিষয়গুলি
অল্প সময়ে শিখে নেয়া যায়। যদি নিজে বই পড়ে শিখতে হয় তাহলে অনেক বেশি সময় প্রয়োজন। আবার অনেকে ধরে
নেয় ট্রেনিং যখন নিচ্ছি তখন আর বইপত্র পড়া প্রয়োজন কি। এই মনোভাব নিয়ে কখনও ভাল গ্রাফিক
ডিজাইনার হবেন না।
ভাল গ্রাফিক ডিজাইনার হওয়ার জন্য অবশ্যই
পড়াশোনা করতে হবে। বর্তমানে পড়াশোনার সুযোগ অনেক বেশি। ইন্টারনেটে খোজ করলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য পাওয়া যায়,
বিনামুল্যে বই ডাউনলোড করা যায়।
সেইসাথে কারো সহযোগিতা পেলে কাজ সহজ হয়
অনেকটাই। কোন প্রতিস্ঠান বা অভিজ্ঞ কোন ব্যক্তি। এরসাথে খরচের বিষয় রয়েছে। আপনি যে বিষয়কে বাকি জীবনের অস্ত্র
হিসেবে ব্যবহার করবেন সেজন্য খরচ করাটাই কি যৌক্তিক না।
ইউনিভার্সিটি থেকে একটা ডিগ্রী নিলে কিছু
একটা চাকরী পাওয়া যাবে একতা ভোলার সময় হয়েছে অনেক আগেই। আশ্চর্যজনকভাবে এখনও অধিকাংশ ছাত্র এই
নিয়মেই চলতে অভ্যস্থ। আশা করেন অলৌকিক কিছু ঘটে যাবে, ভাল একটা
চাকরী জুটে যাবে। বাস্তবতা হচ্ছে মানুষ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী নিয়ে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে
কাজ করছে, এমবিএ ডিগ্রী নিয়ে ব্যাংকের কেরানী হচ্ছে। কারন একটাই,
শিক্ষা প্রতিস্ঠানের শিক্ষা এবং বাস্তব কাজের সমম্বয় না
থাকা।
আপনি এই ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে পারেন না। যা পারেন তা হচ্ছে নিজেকে নিরাপদ রাখতে যোগ্য হিসেবে গড়ে
তোলার চেষ্টা করা। বাস্তবে যা করতে হবে সেটা শেখার দিকে দৃষ্টি দেয়া। গ্রাফিক ডিজাইন যদি শিখতেই হয় ভালভাবে
শিখুন, অথবা মাথা থেকে সহজে টাকা আয়ের চিন্তা
বাদ দিন।
Part-2
ফটোশপ ডিজাইন বিক্রি করে আয় করুন ইন্টারনেটে টাকা আয় –
ফটোশপ
ডিজাইন বিক্রি করে আয় করুন
ডিজিটাল
ইমেজ মানেই ফটোশপ। আপনি ফটোশপে কাজ করেন অথচ আয় করার সুযোগ পাবেন না সেটা হয় না। নিজের
মনের মত ডিজাইন তৈরী করুন এবং সেগুলি বিক্রি করুন ইন্টারনেটের মাধ্যমে। যত বেশি ক্রেতা
কিনবে আপনি তত বেশি অর্থ পাবেন। ফ্রিলান্সার আপনার ডিজাইন বিক্রির সব ব্যবস্থা করে
দেবে।
অবশ্যই
আপনাকে দৃষ্টিনন্দন, কাজের উপযোগি এবং ডিজাইনের নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। এজন্য রয়েছে
কিছু গাইডলাইন। সেগুলি জেনে নিন।
. ফটোশপে ডিজাইনের সময় ডিজাইনের গঠন ঠিক রাখুন।
লেয়ার কিংবা গ্রুপগুলিকে এমনভাবে সাজান যেন সেগুলির নাম দেখে সহজে বোঝা যায় কোনটির
কাজ কি। শুরুতেই Head, body এবং foot নামে তিনটি লেয়ার গ্রপ তৈরী করে নিতে পারেন, এরপর
নির্দিষ্ট লেয়ারগুলিকে সেখানে রাখতে পারেন।
. ডিজাইনটি কোথায় ব্যবহারের জন্য তৈরী সেটা
মাথায় রেখে ক্যানভাস সাইজ, কালার মোড শুরুতেই ঠিক করে নিন। ওয়েব, টিভি কিংবা কোন ধরনের
স্ক্রিনে ব্যবহারের জন্য RGB এবং প্রিন্টের জন্য CMYK কালার মোড ব্যবহার করুন। একভাবে
তৈরী করে অন্য মোডে কনভার্ট করবেন না।
ডিসপ্লের
জন্য রেজ্যুলুশ ৭২ ডিপিআই রাখতে পারেন, প্রিন্টের জন্য ৩০০ ডিপিআই রাখুন।
ক্যানভাসের
মাপ সঠিক রাখুন। ওয়েব পেজে ব্যবহারের জন্য সাধারন মাপ হচ্ছে পাশের দিকে ৯৬০ থেকে ৯৮০
পিক্সেল। উচ্চতা সেখানে কি থাকবে তারসাথে মানানসই।
প্রিন্টের
জন্য ডিজাইন করলে এ৪ অথবা লেটার সাইজ ব্যবহার করুন।
. ডিজাইনের সৌন্দর্য পুরোপুরি অনুভুতির বিষয়।
প্রতিটি ডিজাইন এলিমেন্টকে এমনভাবে তৈরী করুন যেন তারা বিশেষ অর্থ বহন করে। ওয়েব পেজের
টেম্পলেট তৈরীর সময় বাটন, লিষ্ট, হেডিং, ট্যাব সবকিছু মানানসই রাখুন।
. যদি এইচটিএমএল কিংবা সিএসএস যথেস্ট না বোঝেন
তাহলেও মাথায় রাখুন, এই ডিজাইন অনুসরন করে কেউ কোড লিখবে। এমনভাবে ডিজাইন তৈরী করুন
যা কোড লিখে তৈরী করা যায়।
. ডিজাইন এমনভাবে তৈরী করুন যেন কিছু বিষয়
সহজে পরিবর্তন করা যায়। যেমন কোন একটি রং বা অবস্থান। এদেরকে ভিন্নভিন্ন ভাবে সাজানো
যেতে পারে এমন ব্যবস্থা রাখুন।
. ডিজাইনের ফন্ট, ইমেজ, টেক্সট ইত্যাদি যেন
ঠিকভাবে ব্যবহার করা যায় সেদিকে দৃষ্টি রাখুন। প্রয়োজনে একটি টেক্সট ফাইলে নির্দেশ
লিখে দিন।
. আপনার নিজস্ব ফন্ট লাইসেন্স থাকলে সেটিও
সাথে দিয়ে দিন। এতে ডিজাইনের দাম বাড়ে।
. অন্তত ৩টি কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন যা থেকে
ডিজাইনের বক্তব্য বোঝা যায়। ফাইলগুলি জিপ করে নাম হিসেবে কিওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
ফ্রিলান্সারে
ছবি জমা দেয়ার জন্য শুরুতে তাদের সদস্য হতে হয় (www.freelancer.com)। সদস্য হতে কোন
খরচ নেই। অন্যান্য নিয়মকানুন জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
ফ্রিল্যান্সিং
বিষয়ক অন্যান্য পোষ্ট
ফ্রিল্যান্সিং
কাজে সাব-কন্ট্রাক্টর ব্যবহার করে বেশি আয়
ফ্রিল্যান্সিং
কাজে সবচেয়ে বড় ভুল
এডসেন্স
এর বিকল্প বিজ্ঞাপন ব্যবস্থা চিতিকা
By Uzzal Malake
No comments:
Post a Comment